সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহসিন আলীর ২য় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৫ সালের এই দিনে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
সৈয়দ মহসিন আলীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের মহসীন আলী ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সকালে প্রয়াত মহসিন আলীর কবরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে ফাতেহা পাঠ ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। পরে বাসায় মিলাদ ও এতিমদের খাবার বিতরণ করা হবে। পরের দিন ১৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় পৌর জনমিলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
সৈয়দ মহসিন আলী ১৯৪৮ সালের ১২ ডিসেম্বর এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ আশরাফ আলী। মায়ের নাম আছকিরুনন্নেছা খানম। ৫ ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড় ছিলেন।
মহসিন আলী ছাত্রজীবনেই আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৭১ সালে ২৩ বছর বয়সে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। সম্মুখসমরে যুদ্ধ চলাকালে গুলিবিদ্ধও হয়েছিলেন তিনি।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার তিনি মৌলভীবাজারের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে আরো সক্রিয় হয়ে পড়েন। রাজনীতির বাইরে সৈয়দ মহসীন আলী একজন সমাজিক সংগঠক ও সাংবাদিকও ছিলেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত মহসীন আলী মৌলভীবাজার মহকুমার রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিতে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৪ সাল থেকে মৌলভীবাজার পৌরসভায় পর পর ৩ বার বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯২ সালে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে তাকে শ্রেষ্ঠ পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করে। এর পর সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় ২০০৮ সালে মৌলভীবাজার ৩ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
তারপর ২০১৪ সালে আবারও এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর একই বছর ১২ই জানুয়ারি তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন। সমাজসেবা মন্ত্রণালয়কে ঢেলে সাজান তিনি। সমাজের প্রকৃত উন্নয়নে কাজ করেন। সেই অবদান রাখার জন্য ২০১৫ সালে সৈয়দ মহসিন আলী ভারতের আচার্য দীনেশ চন্দ্র সেন রিসার্চ সোসাইটির কাছ থেকে ‘আচার্য দীনেশ চন্দ্র সেন স্মৃতি স্বর্ণপদক-২০১৪’ লাভ করেন এবং ‘হ্যালো কলকাতা’ নামে কলকাতাভিত্তিক একটি সমাজকল্যাণ প্রতিষ্ঠান তাকে ‘নেহেরু সাম্য সম্মাননা-২০১৪’ পুরস্কারে ভূষিত করে।
এছাড়াও দেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করে।